প্রায় ৪০০ বছরের পুরোনো এই কালীবাড়ী নিয়ে নানান অলৌকিক রহস্য দানা বেঁধে আছে । ১৮৪৮ সালের শোভাবাজারের জমিদার জয়নারায়ন মিত্র বরাহনগরে এই কালীবাড়ির প্রতিষ্ঠা করেন, তিনি ভীষন নিয়ম ও নিষ্ঠার সাথে মায়ের প্রতিষ্ঠা করেন। এই মন্দির টি নবরত্ন শৈলীতে নির্মিত, যার অর্থ এটি নয়টি চূড়াবিশিষ্ট। মন্দিরের চত্বরে ১২টি আটচালা শিব মন্দির রয়েছে, যা কালী মায়ের সঙ্গী শিবের উদ্দেশ্যে নিবেদিত। মন্দিরের প্রধান দেবী ‘কৃপাময়ী কালী’, যিনি করুণাময়ী রূপে পূজিত হন।রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এই মন্দিরে বহুবার এসেছিলেন এবং মায়ের দর্শন লাভ করেছিলেন, বরাহ নগরের এই কালীবাড়ি শুধু মন্দির নয়, এই মন্দিরের সাথে জড়িয়ে আছে অনেক পুরোনো ইতিহাস। এই কালীবাড়ির বিশেষত্ব হলো, মায়ের মূর্তি এখানে ভিন্নধর্মী । মায়ের মুখ সরাসরি দেখা যায়না। তিনি একটি ছোট্ট ঘরে বিরাজ করেন। মা এখানে মূলত দক্ষিণাকালী বেশে বিরাজ করেন। পুরোনো ইতিহাস ঘাটলে শুনতে পাওয়া যায় এই মন্দিরের পিছন থেকে একটি সুড়ঙ্গ সোজা চলে গেছে গঙ্গার কাছে । তবে বর্তমানে এই সুড়ঙ্গের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় নি। এই মন্দিরের সাথে অনেক ইতিহাস জড়িয়ে আছে।১৮৫৯ সালের নীল বিদ্রোহের সময় এই মন্দির আশেপাশের এলাকায় বিপ্লবীরা আশ্রয় নিয়েছিল বলে মনে করা হয়।আরো শোনা যায় এই কালী বাড়ি থেকে কিছু ইংরেজ সৈন রাতারাতি উধাও হয়ে গিয়েছিল।অমাবস্যার দিন, কালীপূজা এবং বৈশাখীর মেলায় বরাহনগরের কালীবাড়ি অনেক ভক্তের সমাগম ঘটে। এখানে আসা প্রতিটি ভক্তই এক রহস্যময় পরিবেশে মন্ত্রোচ্চারণে মগ্ন হয়ে ওঠে।বরাহনগরের কালীবাড়ি শুধু একটি মন্দির নয়, এটি কলকাতার অতীতের এক অজানা অধ্যায়ের সন্ধান। এর গম্ভীরতা, ইতিহাস আর লোককথা আমাদের শহরের প্রাচীনত্বের এক অনন্য দিক তুলে ধরে।
বরাহ নগরের রহস্যময় কালীবাড়ি
- Post author:smartbangali
- Post published:May 22, 2025
- Post category:BENGALI / The Facts
- Post comments:0 Comments
Share your knowledge