আচ্ছা দমদমের নাম ঠিক দমদম কেন হলো- জানতেন কি?
অজানা দমদম: এক ব্যতিক্রমী কলকাতার প্রান্তচিত্র, যেখানে বিমানবন্দর, মেট্রো স্টেশন আর ব্যস্ত বাজারের ভিড়—সেইখানেই লুকিয়ে আছে এক নিঃশব্দ ইতিহাস, এক অজানা গল্প—দমদম। শুধু একটি ট্রানজিট পয়েন্ট নয়, বরং এক বাঙালিয়ানার স্তরভিত্তিক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি।
দমদম নামের পেছনে ইতিহাস: একটি বারুদের গল্প
“দমদম” নামটি এসেছে দমদম আর্সেনাল নামক এক অস্ত্র কারখানা থেকে, যা ব্রিটিশ আমলে গড়ে উঠেছিল। ১৮৯০-এর দশকে এখানেই তৈরি হয়েছিল ber infamous “dum-dum bullets”—এক ধরনের বিস্ফোরণ-জাত গুলি, যা শরীরে ঢুকে বেশি ক্ষতি করত। এই ধরনের গুলি পরে যুদ্ধের সময় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে কারখানার গল্প এখানেই থেমে যায়নি—এর প্রভাবে অঞ্চলটির নাম স্থায়ীভাবে “দমদম” হয়ে ওঠে।
ঐতিহ্যের ছায়ায় দমদম
- নিমতা ও বরানগরের প্রাচীন মন্দিরসমূহ, যেগুলোর স্থাপত্যে উঠে আসে মগরালীয় শিল্প ও বাংলা পটচিত্রের ছাপ।
- দমদমের রাজবাড়িগুলো ও পুরনো জমিদার বাড়ি, যেখানে টিকে আছে কাঠের বেলকনি, লোহার গেট আর দরজার ওপাশে শতাব্দী পুরোনো স্মৃতি।
পুরনো আর নবজাগরণের সন্ধিক্ষণ
দমদম শহরতলির বৈশিষ্ট্যই হলো—এখানে একইসঙ্গে coexist করে পুরাতন বাংলার ছায়া ও আধুনিক নাগরিক প্রগতি। মেট্রোর ধোঁয়ায় ঢাকা পড়লেও, সন্ধের পর পাড়ার মোড়ে মোড়ে গল্প জমে ওঠে ঠিক সেভাবেই, যেভাবে হয়েছিল পঁচিশ বছর আগে।
মানুষের দমদম: পারিবারিকতা ও প্রতিবেশী সংস্কৃতি
এলাকার সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো এখানকার মানুষ—এখানে এখনো কেউ কাউকে “কাকু”, “দাদু” বা “দিদিমণি” বলে ডাকে। ফুটবল খেলার মাঠে চিৎকার করে ওঠে সদ্য বড় হওয়া কিশোরেরা, আর পাড়ার লাউডস্পিকারে বাজে রবীন্দ্রসংগীত।
দমদম এক গল্প—যেখানে কারখানার ধোঁয়া, মায়ের রান্নাঘরের গন্ধ, আর ইতিহাসের ছায়া মিলেমিশে এক অনন্য শহর-স্মৃতি তৈরি করে। এই অঞ্চল কলকাতার দ্বার, কিন্তু নিজেই এক ভিন্ন শহর, এক আত্মবিশ্বাসী পরিচয়।
Discover more from SmartBangali
Subscribe to get the latest posts sent to your email.
Leave a Reply