আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর কথা আমরা কম বেশি সবাই জানি। ওনার আবিষ্কারের কথাও সর্বজন বিদিত। তাও মানুষটির সম্বন্ধে অনেক তথ্যই আমরা জানি না, অথবা কম জানি। আজ তার সেই অচেনা অজানা কথা গুলোই বলবো। জগদীশ চন্দ্র বসুকে আমরা সবাই চিনি, গাছের প্রাণ আছে এই তথ্য প্রমাণ করার জন্য। কিন্তু আমরা এটা জানিনা, যে উনি প্রথমে বিজ্ঞান মনষ্ক ছিলেন না। উনি ১৮৭৯ সালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। তাঁর এই বিজ্ঞানের প্রতি প্রবল ঝোঁক সৃষ্টি করেছিলেন ওই কলেজের একজন খ্রিস্টান যাজক, যার নাম ইউজিন ল্যাফান্ট। জগদীশ চন্দ্র বসুর বাবার প্রবল পীড়াপীড়ি তে তিনি লন্ডন যাত্রা করেন চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনোর জন্য। তাঁর এই বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা এবং সেই পথের সাথী হয়ে ওঠার যাত্রা খুব একটা সহজ ছিল না। তিনি লন্ডনে খুব বেশি দিন পড়াশুনো চালিয়ে যেতে পারেননি, তার দৈহিক ও শারীরিক অসুস্থতা কারণে। অবশেষে তিনি তার ভগ্নিপতি আনন্দমোহন বসুর সাহায্যে ও আনুকূল্যে প্রকৃতি বিজ্ঞান অর্থাৎ ফিজিক্স নিয়ে কেমব্রিজের ক্রাইস্ট কলেজে ভর্তি হন। অবশেষে তিনি বিএসসি পাশ করেন ১৮৮৪সালে।ঠিক পরের বছর উনি ভারতে ফিরে আসেন ও প্রেসিডেসি কলেজের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। সেই সময় ভারতীয়দের খুব নিচু করে দেখতো ইংরেজরা। আর সেই কারণের জন্য ওনার বেতন আর পাঁচটা ইউরোপিয়ান অধ্যাপকের থেকে কম ছিল। তিনি তার প্রতিবাদে বিনা বেতনেই অধ্যাপনা করেন ও নিজের লক্ষ্যের দিকে অবিচলিত থাকেন। বহু প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তিনি ছোট্ট একটা ঘরে তার গবেষণা চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৮৯৫ সালে অতিক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সৃষ্টি ও সেই তরঙ্গকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রেরণে সফলতা অর্জন করেন। তিনি তার গবেষণা সুদূর বিদেশের মাটিতেও পৌঁছে দেন। রয়েল ইনস্টিটিউশন এ বক্তৃতা দেন। তিনি তাঁর অসামান্য আবিষ্কার ক্রিসকোগ্রাফ যন্ত্রের সাহায্যে সারা পৃথিবীকে প্রমাণ করে দেন গাছেরও প্রাণ আছে।
